সারা দেশে পুলিশ বাহিনী তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্ম বিরতিতে যাওয়ায় রাজপথে বর্তমানে নেই কোন ট্রাফিক ব্যবস্থা । এর ফলে দেশের সকল শহরের রাস্তাঘাট হয়ে পড়ে অনিরাপদ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। ভেঙ্গে পড়ে সকল শহরের রাস্তাঘাটের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। এ অবস্থায় দেশের অন্যান্য স্থানের মত খুলনা মহানগরের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং পথচারীদের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থার দায়িত্ব নিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং আনসার ভিডিপির সদস্যবৃন্দ।শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগে মহানগর জুড়ে এসেছে শৃঙ্খলা। যার ফলে খুশি সাধারণ মানুষ। বিগত তিনদিন যাবত সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত খুলনা মহানগর এর শিববাড়ি মোড়,ডাকবাংলা মোড়, রয়েলের মোড়, জিরো পয়েন্ট, নতুন রাস্তা মোড় দৌলতপুর ট্রাফিক মোড় ফুলবাড়ী গেট ট্রাফিক মোড় সহ মহানগরের সমস্ত ট্রাফিক মোড় ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
আশেপাশের কয়েক জেলার প্রাণকেন্দ্র এই খুলনা মহানগর। ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকুরী সহ চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে আসেন হাজার হাজার মানুষ। ট্রাফিক পুলিশ ছাড়া এই শহরের রাস্তায় যান চলাচলের শৃঙ্খলা ধরে রাখা যেন অকল্পনীয়। কিন্তু গেল তিনদিন ধরে মহানগরের কোথাও নেই ট্রাফিক পুলিশ। তাই শহরের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের তরুণ শিক্ষার্থীরা এবং আনসার ভিডিপির সদস্যবৃন্দ। দিন-রাত সমানভাবে মহানগরীর সকল ট্রাফিক পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছে শিক্ষার্থীরা এবং আনসার ভিডিপির সদস্যবৃন্দ। দেশকে নতুনভাবে সাজাতে দেশের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে এই দায়িত্ব পালনে তাদের নেই কোন ক্লান্তি, নেই কোন অবসাদ। তাদের মুখে দেখা গেছে আনন্দের এক প্রতিচ্ছবি।
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে হাসিমুখে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনে পিছিয়ে নেই খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আলহাজ্ব সারোয়ার খান কলেজের চৌকস ক্যাডেট বৃন্দ। তারা খুলনা শহরের দৌলতপুর এলাকার বেশ কয়েকটি স্থানে ট্রাফিক ব্যবস্থা সচল রাখতে কাজ করছে।
কলেজের ১০ জন ক্যাডেট সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা সচল রাখার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমান সময়ে ট্রাফিক না থাকার কারণে সাধারণ মানুষের যাতে ভোগান্তি না হয় এবং যানবাহন চলাচল যেন স্বাভাবিকভাবে হতে পারে এজন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিএনসিসি সুন্দরবন রেজিমেন্টের নির্দেশনা ও আলহাজ্ব সারোয়ার খান কলেজ বিএনসিসি ইউনিটের সামরিক প্রশিক্ষক সার্জেন্ট মোঃ তরিকুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে মূলত ক্যাডেটবৃন্দ এই মানবিক কাজে আত্মনিয়োগ করেছে।
যেসব ক্যাডেট ট্রাফিক দায়িত্ব পালন করেছে তারা হলো ইমরান শাকিল,সয়ন, তাফি,রমিম, মারুফ, স্বর্ণা, বর্ণা, রিমি ও উর্মি।
আগামী ১০ আগস্ট দৌলতপুরে তিনটি পয়েন্ট যথাক্রমে বিএল কলেজের সামনের গেট , দৌলতপুর ট্রাফিক পুলিশ মোড় , মহাসিন স্কুলের সামনের মোড়ে সারওয়ার খান কলেজের ক্যাডেট বৃন্দ ট্রাফিক ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ করবে।
জানাযায়, মানবিক কাজে অত্র কলেজের বিএনসিসি ক্যাডেটবৃন্দ সবসময় নিয়োজিত থাকে। দেশ গঠনের যে কোনো কাজের জন্য এরা প্রস্তুত বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান।সংকটকালে ঐতিহ্যবাহী আলহাজ্ব সারোয়ার খান কলেজের বিএনসিসি ক্যাডেটদের এ ধরনের উদ্যোগ এলাকায় ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে সুন্দরভাবে গড়তে আমরা সব সময় পাশে আছি এবং থাকবো বলে জানায় শিক্ষার্থীবৃন্দ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ ও দায়িত্ব পালনে খুশি পথচারীরা।
বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়তে পথ দেখাচ্ছে তরুণ ছাত্রসমাজ বলে মনে করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আলহাজ্ব সারোয়ার খান কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন কর্মকাণ্ডগুলো নতুন কিছু সৃষ্টির পথ দেখাবে আগামী নেতৃত্বকে।