খুলনাঞ্চলের সর্ববৃহৎ পরিবেশবাদী সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন “আলোর মিছিল” ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উদ্বোধনের মাধ্যমে দিঘলিয়ায় শুরু করেছে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।
কর্মসূচী শুরুর পূর্বে গত ২৮ আগষ্ট বুধবার দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাঝে বিভিন্ন প্রজাতির ২ হাজার ফলজ ও বনজ বৃক্ষ বিতরণ করেন। যেখানে পরিবেশবাদী সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন “আলোর মিছিল” ২০০টি গাছের চারা উপহার হিসাবে গ্রহণ করে। বৃক্ষ বিতরণ কালে নির্বাহী অফিসার বলেন, “পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণ এর বিকল্প নাই। গাছ আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়। অক্সিজেন ছাড়া আমাদের বেঁচে থাকা কোনো ক্রমেই সম্ভব না । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি জীবন ও সম্পদ রক্ষায় গাছের বিকল্প নেই। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সীমাহীন প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের গাছের সংখ্যা নিতান্তই কম। তাই প্রত্যেকেরই উচিত পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষরোপণে অংশগ্রহণ করা। জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আনতে পর্যাপ্ত বৃক্ষরোপণ দরকার। কেননা বৃক্ষহীন পরিবেশ জীবন-জীবিকার জন্য ভয়াবহ হুমকি। গাছ লাগানোর পাশাপাশি সম্পদের ক্রমবর্ধমান ঘাটতি পূরণে লাগামহীন বৃক্ষনিধনও বন্ধ করা প্রয়োজন। গাছ লাগানোর পাশাপাশি গাছ বাঁচাতে হবে। তাহলে আমাদের বনজ সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, পরিবেশও সুন্দর হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উক্ত বক্তব্যের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে পরিবেশবাদী সংগঠন “আলোর মিছিল” সপ্তাহব্যাপী এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করেছে। বৃক্ষরোপনের পাশাপাশি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে চারার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সংগঠনটি। সংগঠনের সভাপতি শেখ তারেক বলেন, “হাজার হাজার বৃক্ষরোপণ করতে পারা কোনো সফলতা না, সফলতা হচ্ছে আমরা রোপনের পর কতগুলো গাছ বাঁচিয়ে রাখতে পারলাম। তাই আমাদের সন্তানের মতো যত্ন করে গাছের চারা রোপন করতে হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্ভোধনকালে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির উপদেষ্টা বিশিষ্ট সাংবাদিক ওয়াহিদ মুরাদ, মোল্যা মাকসুদুল ইসলাম, সৈয়দ শাহজাহান, আলীবুদ্দিনসহ অতিথি হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন মাহী পলাশসহ স্থানীয় অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সংগঠনটির সভাপতি শেখ তারেকসহ সেচ্ছাসেবক হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন মফিজুল ইসলাম মিনা, শেখ ফিরোজ আহমেদ সম্রাট, মোঃ আকিব হোসেন, সাদিয়া, সজল কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।
বৃক্ষরোপণের উদ্ভোধনকালে সংগঠনের সেচ্ছাসেবকদের বক্তব্যে তারা বলেন “বৃক্ষ প্রকৃতি ও জীবজগতের অপরিহার্য অংশ। তাই বৃক্ষ ছাড়া পৃথিবীর বুকে প্রাণের অস্তিত্ব কল্পনাতীত। নির্বিচারে বৃক্ষনিধন প্রকৃতিকে করছে বিপন্ন। জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ হয়ে পড়েছে হুমকির সম্মুখীন। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্ব পরিবেশের বিপর্যস্ততার কারণ বিশ্বের বনভূমি উজাড় । জীবন ও পরিবেশের সম্পর্ক অবিচ্ছিন্ন জীবনকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। বৃক্ষ জলীয়বাষ্প তৈরির মাধ্যমে বৃষ্টি ঝরিয়ে ভূমিতে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি করে। তাছাড়া মাটির ক্ষয় রােধ করে নদীর ভাঙন থেকে ভূভাগকে রক্ষা করে, মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষার ক্ষেত্রেও পালন করে অনন্য ভূমিকা। সবশেষে তারা বলেন, বেশি বেশি গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান।”