খুলনার দিঘলিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড এর আয়োজনে কোটা আন্দোলনকারী এবং দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, মানববন্ধন কর্মসূচি ও স্বারক লিপি পেশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮জুলাই) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিঘলিয়া থানা কমান্ড, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কাউন্সিল ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান প্রজন্ম কাউন্সিলের আয়োজনে দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বিরাট বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধন শেষে উপজেলা অডিটরিয়ামে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দিঘলিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামান বাচ্চু, ডেপুটি কমান্ডার গাজী আজগর আলী এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি গাজী লুৎফর রহমানসহ আরো অনেকে।
উক্ত কর্মসূচিতে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিঘলিয়া থানা কমান্ড এর সকল সদস্যবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কাউন্সিল ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান প্রজন্ম কাউন্সিলের মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
এ সময় তারা কোটা আন্দোলনকারী এবং তাদের মদদ দাতাদের বিরুদ্ধে নানা প্রকার স্লোগানে স্লোগানে চারিদিক প্রকম্পিত করে তোলেন। স্লোগানের ভিতর তারা বলেন- তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা, তুমি কে আমি কে- বাঙালি বাঙালি, একাত্তরের হাতিয়ার-গর্জে উঠুক আর একবার, মুক্তিযোদ্ধারা বলে যাই- শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই- শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজাকারের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও, জয় বঙ্গবন্ধু- জয় বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা- জয় বাংলা।
কর্মসূচি চলাকালে উপস্থিত নানা পেশার লোকজন মুক্তিযোদ্ধাদের এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে স্লোগানে অংশ নেন।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি কোটা আন্দোলন নিয়ে শিক্ষার্থীরা দেশে একটি নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে, তারা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটাক্ষ করেছে, এদের ক্ষমা করা যাবে না। বক্তারা কোটা পদ্ধতি বহাল রাখার জোর দাবী জানান। সরকারের বিরুদ্ধে যে কোন ষড়যন্ত্র রুখতে মুক্তিযোদ্ধারা সর্বদা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবেন বলে তারা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বক্তারা আরো বলেন, দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করেছি এই দেশটি কারো বাপ দাদার সম্পত্তি না যখন যা ইচ্ছা তাই করবেন, কোটা আন্দোলনের নামে বাংলাদেশে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন কার ইন্ধনে করছেন এটা আমরা জানি, আন্দোলন করেন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন। কিন্তু অন্যায় ভাবে আন্দোলনের নামে দেশে যা কিছু করবেন তা এ দেশের জনগণ কোনভাবেই মেনে নেবে না। আমরা যুদ্ধ করেছি বলে আপনারা পেয়েছেন একটি স্বাধীন দেশ। একটা কথা মনে রাখবেন মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবনকে বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে নেমেছিল। দেশবিরোধী যে কোন ষড়যন্ত্র রুখতে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সর্বদাই প্রস্তুত আছি।
কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্রতিনিধি দল দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মাসুম বিল্লাহ’র মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্বারক লিপি প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ স্বারক লিপি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অতি শীঘ্রই স্বারক লিপিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হবে।