কক্সবাজার জেলার রামু বাইপাসস্থ নাহার পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এন.আমিন প্লাজায় নুরুল আলম ছিদ্দিকী রাশেদ তার স্ত্রী-সন্তানসহ বসবাস করে আসছিলেন। ভিকটিম নুরুল আলম ছিদ্দিকী রাশেদের সহিত আসামী মোতাহের হোসেন (৫৭), জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল। এছাড়া আসামী মোতাহের বিগত ফুলনীরচর স্কীম মৌসুমে ভিকটিম নুরুল আলমের সহিত নির্বাচন করে পরাজিত হয়। নির্বাচনে জয়লাভের পর ভিকটিম নুরুল আলম কৃষকদের সুবিধা হয় এরকম কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহন করে যাতে কৃষকের লাভ হয়। এতে করে আসামী মোতাহের ভিকটিম নুরুল আলমের উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ভিকটিম নুরুল আলম জনৈক ফরিদুল আলমের বাড়ির সামনে জনসাধারনের চলাচলের রাস্তায় পৌছামাত্র পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা আসামী মোতাহের তার অপরাপর সহযোগী আসামীদের সহায়তায় চাইনিজ কুড়াল, রাম-দা, দুই ধারার লম্বা ছুরি, সুইচ গিয়ার, ধারালো দা ও এসএস পাইপ সহকারে এলোপাথারি আক্রমন শুরু করে। আসামী মোতাহের ধারালো দা দ্বারা ভিকটিম নুরুল আলমের পায়ে আঘাত করে পা গোড়ালি থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ভিকটিমের ডাকচিৎকারে আসে পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে মোতাহেরসহ অপরাপর আসামীরা অস্ত্র-সস্ত্র সহকারে মামলা মোকদ্দমা না করার হুমকি ধমকি প্রদর্শন করে ঘটনান্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে উপস্থিত লোকজন ভিকটিম নুরুল আলমকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উক্ত ঘটনার পর মৃত নুরুল আলমের ভাই সাইফুর রহমান ওরফে সুজন তার পরিবারের সাথে পরামর্শ করতঃ কক্সবাজার জেলার রামু থানায় আসামি মোতাহের হোসেনসহ ১৪ জন আসামী এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডের ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইলেক্ট্রনিক প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।
গতকাল (০৩ অক্টোবর) র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এবং র্যাব-১৫ এর সহযোগীতায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে কক্সবাজার জেলার রামু এলাকায় চাঞ্চল্যকর নুরুল আলম ছিদ্দিকী রাশেদ হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড মোতাহের হোসেন (৫৭), কক্সবাজার’কে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মোতাহের উক্ত হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও মাস্টার মাইন্ড বলে স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় করা হয়েছে।