রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মৌপাড়া গ্রামের গাঁজা ব্যবসায়ী আজিজুল ও তার সহকারি মোজাম্মেল বাকিতে গাঁজা বিক্রি করেন মাহাতাব নামে এক মাদক ব্যবসায়ির কাছে।
রোববার (২৪ মার্চ) সকালে মৌপাড়া মিরপাড়া গ্রামে হাসানের চাস্টলে চা খেতে আসেন মাহাতাব। তাকে হাতের কাছে পেয়ে মাদকের পাওনা টাকা তুলতে গাঁজা ব্যবসায়ী আজিজুল ও তার সহকারি মোজাম্মেল টাকার জন্য মাহাতাবকে চাপ প্রয়োগ করলে শুরু হয়
কথা-কাটাকাটি এবং ধ্বস্তাধস্তি। এসময় চা ব্যবসায়ী হাসান ও শফিকুল মাহাতাবের পক্ষ নিলে থেমে যায় গন্ডগোল। এঘটনায় গাঁজা ব্যবসায়ী আজিজুল ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রশাসন দিয়ে হাসানের ব্যবস্থা করবে বলে আল্টিমেটাম দেয়। কিছুক্ষণ পরে হাসানের মোবাইল নাম্বারে র্যাব পরিচয়ে ফোন আসে এবং অপরপ্রান্ত থেকে বলে তুই আগে গাঁজা বিক্রি করতিস এখন এ্যালকোহল (কট) বিক্রি করিস। তোর চা-স্টলের ভিডিও আমার কাছে আছে। তুই দ্রুত যাদের সাথে ঝামেলা করেছিস তাদের সাথে মিমাংসা করে নে। র্যাব পরিচয়ে ফোন পেয়ে ঘাবড়ে যায় হাসান। তার কিছুক্ষণ পরে গাঁজা ব্যবসায়ী আজিজুলের সহযোগী মোজাম্মেল টাকার বিনিময়ে ভাড়া করেন কথিত সোর্স জোবায়েরকে। তাকে সাথে নিয়ে হাসানের বাড়ির কাছে নিজেদের বহন করা কটের (এ্যালকোহল) খালি বোতল ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়ে ছবি তোলার সময় দেখতে পান হাসান। হাসানের সন্দেহ হলে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে মোজাম্মেল ও জোবায়েরকে আটক করেন তারা।
স্থানীয়দের জেরায় পড়ে কথিত সোর্স জোবায়ের নিজেকে বাঁচাতে র্যাব ও পুলিশের সোর্স পরিচয় দেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় সাংবাদিক ও মোহনপুর থানা পুলিশের এসআই শফিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। পুলিশ বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিতে বললে অস্বীকৃতি জানায় হাসান। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হোন মৌগাছি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ার হোসেন এবং বিষয়টি মিমাংসার উদ্যেগ নেন। এসময় স্থানীয় একজন সাংবাদিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট ও তাদের বেকায়দায় ফেলে ফায়দা নেওয়ার জন্য কথিত সোর্স জোবায়েরকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের মাধ্যমে
জানতে চান সে কোন কোন সংস্থার সোর্স। এসময় জোবায়ের নিজেকে বন্দীদশা থেকে মুক্ত করতে মোহনপুর থানা পুলিশের এসআই আব্দুল হাই ও এসআই জোবায়ের ও র্যাব-৫ রাজশাহী এফএস ধলু ও সোহাগের নাম ব্যবহার করে বলেন আমি তাদের সোর্স।
ভিডিও’ বক্তব্যে জোবায়ের বলেন, আমি এখানে এসেছি সেটা র্যাবের ধলু ও সোহাগ ভাই জানে। অথচ কথিত সোর্স নিজেকে বাঁচাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর যেসকল সদস্যদের নাম ভাঙ্গিয়েছেন তারা সবাই সরকারি কাজে কেউ জেলায় আবার কেউবা জেলার বাহিরে ছিলেন এবং ঘটনা সম্পর্কে তারা কেউই অবগত নয়।ঘটনার দিন সন্ধ্যার পরে স্থানীয় মেম্বার আনোয়ার হোসেন এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে মিমাংসায় বসলে কথিত সোর্স জোবায়ের নিজেকে বাঁচানোর জন্য পুলিশ ও র্যাবের সোর্স পরিচয় দিয়ে ভুল করেছেন বলে স্বীকার করেন। ভবিষ্যতে সে আর কোনদিন নিজেকে সোর্স পরিচয় দিবেনা বলে মুচলেকা দেন। পরে দুই পরিবারের অনুরোধে জোবায়ের ও গাঁজা ব্যবসায়ী আজিজুলের সহকারি মোজাম্মেলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।এবিষয়ে স্থানীয় মেম্বার আনোয়ার হোসেন বলেন, এঘটনায় জড়িত সকলকে কানধরে উঠবোস করানো হয়েছে। জুবায়ের নিজেকে কখনো সোর্স পরিচয় দিবেনা মর্মে মুচলেকা দিয়েছে। গাঁজা বিক্রেতা আজিজুল কখনো মাদক ব্যবসা করতে পারবেনা বলে তার পরিবারকে হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে মোহনপুর থানা (ওসি) হরিদাস মন্ডল বলেন, মৌপাড়া গ্রামের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিতর্কিত করতে যারা লিপ্ত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ।