নিজস্ব প্রতিবেদক: উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুসলিমদের বিয়ের ক্ষেত্রে নিবন্ধনের ফরম সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। প্রায় ৫০ বছর পর নিকাহনামার এই সংশোধনে বাদ যাচ্ছে নারীর জন্য আপত্তিকর ‘কুমারী’ শব্দটি। এ ছাড়া বরের স্ত্রী কতজন বর্তমান আছে, বা আগে বিয়ে হয়েছিল কিনা তাও জানাতে হবে সংশোধিত ফরমে। এর আগে বরের বিয়ে বা বউ আছে কিনা এমন তথ্য চাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না ফরমে।
এ নিয়ে চলতি মাসেই প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এরই মধ্যে খসড়া (সংশোধিত) ফরম প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি নিকাহ রেজিস্ট্রারদের (কাজি) শিক্ষাগত যোগ্যতা আলিম থেকে বাড়িয়ে ফাজিল এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভায় সুবিধাজনক স্থানে নিজ খরচে একাধিক অফিস স্থাপনের পরিবর্তে একটিমাত্র কাজি অফিস করতে বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন') আইন, ১৯৭৪-এর আলোকে ২০০৯ সালে বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। নিকাহনামা ফরমে ২৫ ধরনের তথ্য চাওয়া হয়। ফরমের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে তথ্য চাওয়া হয় ‘কন্যা কুমারী, বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্ত নারী কিনা?’ ২০২২ সালে এক রায়ে এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন ও সংশোধন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। খসড়া ফরমে এটি সংশোধন করে ‘কন্যা অবিবাহিত, বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্ত নারী কিনা?’ লেখা হয়েছে।
নিকাহনামা ফরম সংশোধন চেয়ে ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রিট মামলা করে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নারীপক্ষ ও মহিলা পরিষদ। ওই বছরই সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট রায়ে মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে কাবিননামায় ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে থাকা ‘কুমারী’ শব্দটি লেখা বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করেন।
২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে নিকাহনামা ফরম থেকে ‘কুমারী’ শব্দ বাদ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি কাবিননামার ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে বরের বর্তমান বৈবাহিক অবস্থা উল্লেখ করারও নির্দেশ দেন আদালত।
রায়ে বলা হয়, নিকাহনামার ২১ ও ২২ নম্বর অনুচ্ছেদে বরের বর্তমানে কোনো বিবাহ বলবৎ আছে কিনা, কেবল সে বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। কিন্তু বর তালাকপ্রাপ্ত বা বিপত্নীক অথবা কুমার কিনা, এ বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়নি। অন্যদিকে, ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে কন্যা তালাকপ্রাপ্ত বা বিধবা কিনা, কন্যা আগে কোথাও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন কিনা-এ ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে, যা অপমানজনক, বৈষম্যমূলক, পক্ষপাতদুষ্ট ও সংবিধানের পরিপন্থি।
রায় অনুযায়ী, এখন থেকে ফরমে লিখতে হবে কন্যা অবিবাহিত, বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্ত নারী কি না। নিকাহনামার ২১ নম্বর দফা সংশোধন হওয়ায় সেখানে অনুরূপভাবে লিখতে হবে, বর বিবাহিত/অবিবাহিত/তালাকপ্রাপ্ত/বিপত্নীক কি না।'
Publisher & Editor: Nirob Hasan Nirjhor
Editor Phone: +8809638077499, News Room: +8801711413059, +8801812910910
E-mail: news@sonarbangla24.com, Office Address: Purbali Market, Shiroil, Rajshahi, Bangladesh
Facebook Page: https://www.facebook.com/SonarBangla24
Website: https://www.sonarbangla24.com