1. www.rohimali2019@gmail.com : Abdur Rohim : Abdur Rohim
  2. alauddinmondol45@gmail.com : Alauddin Mondol : Alauddin Mondol
  3. dainiksonarbangla24@gmail.com : Hafiz Rahman : Hafizur Rahman
  4. msalimreza4u@gmail.com : Salim Reza : Salim Reza
  5. admin@sonarbangla24.com : sayem :
  6. allbanglanewspaperlive@gmail.com : Shipon Ahmed : Shipon Ahmed
ব্ল্যাকহোলে পড়ে গেলে কী হবে - সোনার বাংলা ২৪
২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| গ্রীষ্মকাল| বুধবার| রাত ২:৪৯|

ব্ল্যাকহোলে পড়ে গেলে কী হবে

সংবাদদাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

সোনার বাংলা: মহাবিশ্বের সবচেয়ে রহস্যমোড়ানো জায়গা ব্ল্যাকহোল। ঘনত্ব প্রায় অসীম হওয়ায় এটি তার চারপাশের স্থানকালকে ভয়ানকভাবে বাঁকিয়ে ফেলে। আশেপাশের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলজুড়ে ব্ল্যাকহোলের মহাকর্ষ থাকে প্রচণ্ড শক্তিশালী। এই অঞ্চলটির চারপাশে থাকে ইভেন্ট হরাইজন বা ঘটনা দিগন্ত। কোনোকিছু একবার ইভেন্ট হরাইজন পেরিয়ে গেলে আর বাইরে আসতে পারে না। মহাবিশ্বের চূড়ান্ত বেগে চলা ভরহীন আলোর কণাও এর ব্যাতিক্রম নয়!



কোনোকিছু যেহেতু ব্ল্যাকহোল থেকে ফিরে আসে না, তাই এর ভেতরের অবস্থা সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। ব্ল্যাকহোলের চারপাশে অন্যান্য বস্তুর অবস্থা, ইভেন্ট হরাইজনে থাকা অ্যাক্রিশন ডিস্ক এবং ব্ল্যাকহোল জেটের মতো কিছু বিষয় থেকে এর অস্তিত্ব বুঝতে পারেন বিজ্ঞানীরা।

রহস্য সম্পর্কে মানুষের কৌতুহল চিরদিনের। ব্ল্যাকহোলের ভেতরে কী ঘটছে, এ নিয়ে প্রচণ্ড আগ্রহ বিজ্ঞানীদের। আসলে সবারই সে আগ্রহ আছে। কিন্তু চাইলেও সেখানে কাউকে পাঠানো সম্ভব নয়।



পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের ব্ল্যাকহোলটির দূরত্ব মাত্র ১৫ হাজার ৬৬ আলোকবর্ষের মতো। যদি এই দূরত্ব পাড়ি দিয়ে ব্ল্যাকহোলের কাছে যাওয়াও যায়, তারপর কী হবে? মানুষ কি ব্ল্যাকহোলের ভেতরে যেতে পারবে? যদি কোনো নভোচারী ব্ল্যাকহোলের ভেতরে যেতে চান, তাহলে কী হবে? মানুষের শরীর কি সে ধকল নিতে পারবে?

এক বাক্যে এ প্রশ্নের জবাব দেন আমেরিকান মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রির হেইডেন প্ল্যানেটেরিয়ামের জ্যোতিঃপদার্থবিদ চার্লস লিউ। তাঁর মতে, ব্ল্যাকহোলে পড়ার সময় আপনার শরীর হয়ে হয়ে যাবে টিউব থেকে বের হওয়া টুথপেস্টের মতো!




কোনো বস্তু যখন ব্ল্যাকহোলের ইভেন্ট হরাইজন বা ঘটনা দিগন্ত অতিক্রম করে যাবে, তখনই বস্তুটি প্রচণ্ড মহাকর্ষীয় টান অনুভব করবে। যেহেতু বস্তুর সব অংশ ব্ল্যাকহোলের কেন্দ্র থেকে সমান দূরে থাকবে না, তাই সব অংশের ওপর ব্ল্যাকহোলের আকর্ষণ বল সমান হবে না। হবে ভিন্ন। ফলে ব্ল্যাকহোলের কাছাকাছি থাকা অংশটা অপেক্ষাকৃত দূরের অংশ থেকে বেশি প্রসারিত হবে। এই ঘটনাটি শুধু ব্ল্যাকহোলের ক্ষেত্রেই যে ঘটবে, তা নয়। পৃথিবীতেও এটা হচ্ছে সবসময়। প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে টের পাই না কেন? উত্তর হচ্ছে, পৃথিবীর অভিকর্ষ বল আমাদের জন্য সহনীয়। এবং এর শক্তিও বেশ কম। তাই, পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে থাকার সময় মাথার চেয়ে আমাদের পা বেশি টান অনুভব করছে কি না, তা আমরা বুঝতে পারি না। কিন্তু ব্ল্যাকহোলের মতো প্রচণ্ড শক্তিশালী মহাকর্ষ বল সমৃদ্ধ বস্তুর বেলায় বিষয়টি খুব সহজেই বোঝা যাবে।

নভোচারী যদি ব্ল্যাকহোলের দিকে পা দিয়ে সোজা ঝাঁপ দেন, তাহলে ঘটনা দিগন্ত পার হওয়া মাত্রই পায়ের অংশটুকু মাথার অংশ থেকে বেশি দ্রুত গতিতে প্রসারিত হতে থাকবে। এভাবে নভোচারীর পুরো শরীর বেঁকে-চুরে হয়ে যাবে নুডলস বা টুথপেস্টের মতো। এক পর্যায়ে শরীরের অণু-পরমাণু ভেঙে রূপান্তরিত হবে অতিপারমাণবিক কণার প্রবাহে। আর সে অবস্থাতেই যাত্রা শুরু করবে ব্ল্যাকহোলের কেন্দ্রের দিকে। ব্ল্যাকহোলের কেন্দ্রের এই জায়গাটিকে বিজ্ঞানীরা বলেন ‘সিঙুলারিটি’ বা ‘অনন্য বিন্দু’। কারণ, এ বিন্দুতে ভেঙে পড়ে পদার্থবিজ্ঞানের প্রমিত মডেল। এ বিন্দুতে মিলেমিশে যায় আপেক্ষিকতা, মহাকর্ষ ও কোয়ান্টাম বলবিদ্যা, এমনটা-ই ধারণা বিজ্ঞানীদের।



শরীরের সব অণু-পরমাণু ভাঙার আগে কতটা সময় পাওয়া যাবে, তা ব্ল্যাকহোলের আকারের ওপর নির্ভর করে একজন নভোচারীর পুরো দেহের এভাবে স্প্যাগেটি বা খাঁটি বাংলায় নুডলসের মতো হয়ে যাওয়াকে ‘স্পাগেটিফিকেশন’ বলে আখ্যায়িত করেন ব্রিটিশ জ্যোতিঃপদার্থবিদ স্যার মার্টিন রিজ। কথাটার অর্থ কী, তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই।

শরীরের সব অণু-পরমাণু ভাঙার আগে কতটা সময় পাওয়া যাবে, তা ব্ল্যাকহোলের আকারের ওপর নির্ভর করে। চার্লস লিউ বলেন, সৌরজগতের সমান একটি ব্ল্যাকহোলের ইভেন্ট হরাইজনের কাছে মহাকর্ষ টানটা অত শক্তিশালী হয় না। তাই এ আকারের কোনো ব্ল্যাকহোলে বেশ কিছুটা সময় নিজের অখণ্ডতা বজায় রাখা যাবে।’ তাঁর কথার সূত্র ধরে বলতে হয়, সহজ করে যদি বলি, স্প্যাগেটিফিকেশনের সঙ্গে ঘটনা দিগন্তের সরাসরি সম্পর্ক নেই। সত্যি বলতে, একজন নভোচারী যখন ব্ল্যাকহোলের কাছাকাছি পৌঁছে যাবেন, তাঁর কাছে মনে হবে সময় ধীর হয়ে গেছে। তাঁর পক্ষে তিনি আসলেই ইভেন্ট হরাইজন পেরিয়ে গেছেন কি না, তা বোঝা কঠিন।’

তা ছাড়া স্প্যাগেটিফিকেশন কখন শুরু হবে, তা-ও নির্ভর করবে ব্ল্যাকহোলের আকারের ওপর। অনেক ছোট ও ভারী কোনো ব্ল্যাকহোলের ঘটনা দিগন্ত পেরিয়ে যাওয়ার আগেই শুরু হতে পারে স্প্যাগেটি বা নুডুলস হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। আবার সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের ক্ষেত্রে ঘটনা দিগন্ত পেরিয়েও অনেকটা সময় বেঁচে থাকা সম্ভব হতে পারে। সৌরজগতের সমান ব্ল্যাকহোলের কথা বলে লিউ আসলে এটাই বুঝিয়েছেন। সাধারণ আলোচনার ক্ষেত্রে অবশ্য গড়পড়তা একটা হিসেব ধরে মাঝামাঝি আকারের ব্ল্যাকহোল নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ লেখাতেও তা-ই করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের করা ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর প্রভাব দেখা যাবে চোখের সামনে। সেটা হবে দারুণ মজার এক অভিজ্ঞতা।



ব্ল্যাকহোলে ঝাঁপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র মহাকর্ষের টানের কারণে আলোর গতি অর্জনের দিকে এগিয়ে যাবেন নভোচারী। আপেক্ষিকতা অনুযায়ী, আলোর বেগের যত কাছাকাছি যাওয়া যাবে, তত ধীর হতে থাকবে সময়। ব্যাপারটা কী ঘটবে বুঝতে পারছেন?

সময় প্রসারণের কারণে অতীতে ব্ল্যাকহোলের ভেতরে কী কী জিনিস এসে পড়েছে, সেটা দেখার সৌভাগ্য হতে পারে এ সময়। নভোচারী যদি নিজের অখণ্ডতা বজায় রেখে ব্ল্যাকহোলের কেন্দ্রের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন, তাহলে একসময় পৌঁছে যাবেন আলোর সমান বেগে। (আসলে, নভোচারী অখণ্ড থাকলে তাঁর ভর থাকবে, সেক্ষেত্রে আলোর সমান বেগ তিনি অর্জন করতে পারবেন না। আলোর বেগ অর্জন করার আগেই নভোচারী আণবিক কণায় পরিণত হবেন। তবু আসুন, হাইপোথেটিক্যালি কল্পনা করে নিই, আমাদের আলোচনার নভোচারী অখণ্ডভাবেই ব্ল্যাকহোলের ভেতরে অর্জন করেছেন আলোর বেগ। কী হবে তখন? সময় হয়ে যাবে স্থির।

সময় স্থির হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের সামনে দেখা যাবে চতুর্মাত্রিক এক মহাবিশ্ব। একসঙ্গে যেখানে দেখা যেতে পারে সুদূর অতীতের বিগব্যাং থেকে সুদূর ভবিষ্যতের মহাবিশ্বের সমাপ্তি। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যতের সংজ্ঞাই হয়তো তখন হয়ে যাবে অর্থহীন। এমন দুদার্ন্ত অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ব্ল্যাকহোলে ঝাঁপ দেওয়ার মতো নভোচারী হয়তো অনেকেই হতে চাইবেন। আপনার কী মনে হয়?



তবে ঝাঁপ দেওয়ার আগে নুডলস হয়ে যাওয়ার কথা ভেবে যদি আপনার দ্বিধা হয়, তাহলে আপনাকে একটু আশার কথা শোনানো যাক। ধরুন, ব্ল্যাকহোলের ভেতরে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে আপনার নশ্বর কোমল দেহ। এই কণাগুলোকে গিলে নিয়েছে ব্ল্যাকহোল। তারপর? তারপর কী হবে?

হতে পারে ওখানেই আপনার জীবন শেষ। আবার হয়তো ওই কণাগুলো ভিন্ন কোনো জগতে গিয়ে এক হয়ে আবার পরিণত হবে ‘আপনি’তে। কীভাবে? হয়তো ব্ল্যাকহোলের ভেতরের জগতে এনট্রপি ভিন্নভাবে কাজ করে। এনট্রপি মানে বিশৃঙ্খলার পরিমাণ। আমাদের মহাবিশ্বে সময় যত সামনে এগোচ্ছে, এনট্রপি বাড়ছে তত। সে জন্য গ্লাস একবার ভেঙে গেলে যত ভাবেই চেষ্টা করা হোক, সেটাকে আগের মতো নিখুঁত করে জোড়া দেওয়া সম্ভব না। ব্ল্যাকহোলের ভেতরে হয়তো তা হবে না, কণাগুলো জুড়ে গিয়ে ‘আপনি’ হয়ে যাবেন। সে ‘আপনি’ আর ‘আগেকার আপনি’ কি একই মানুষ হবেন?

একটা গ্লাসকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলে সেই টুকরোগুলো জুড়ে আবার গ্লাস বানালে সেটা কি একই হবে? গ্লাসের স্মৃতি নেই, মানুষের আছে। কিন্তু স্মৃতি এক হলেই কি হলো? একই মানুষ হবে আগের-পরের দুজন? কে দেবে এসব প্রশ্নের জবাব? বিজ্ঞান এখানে নীরব।

এই যে বলছি, আপনার দেহের কণাগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে, এই অনুমান করছি পদার্থবিজ্ঞানের প্রমিত মডেলের জ্ঞান ব্যবহার করে। কিন্তু সে জ্ঞান তো খাটে না ব্ল্যাকহোলের ভেতরে। তাহলে?

কেউ জানে না। কৃষ্ণগহ্বর তাই আজও এক রহস্য। রজার পেনরোজের ধারণা, কৃষ্ণগহ্বরগুলো ধীরে ধীরে গিলে নেয় মহাবিশ্বের সব ভর। আর মহাবিশ্বজুড়ে বেড়ে চলে বিশৃঙ্খলা। এই বিশৃঙ্খলা সবচেয়ে বেশি হয় কৃষ্ণগহ্বরের ভেতরে। হকিংয়ের একটা ধারণা ছিল, একসময় উবে যাবে মহাবিশ্বের সব কৃষ্ণগহ্বর। হারিয়ে যাবে সব ভর। এভাবে মহাবিশ্বের সব ভর যদি হারিয়ে যায়, মহাবিশ্ব নিজেই ভুলে যাবে সে কে। তখন আবার জন্ম নেবে পরবর্তী নতুন মহাবিশ্ব। এই ধারণাটিকে কসমোলজিস্ট, মানে সৃষ্টিতত্ত্ববিদেরা মেনে নেননি। কিন্তু রজার পেনরোজের ধারণা বলে কথা! আর কেউ যখন কৃষ্ণগহ্বরকে মেনে নেয়নি, তিনি তখন ওর পেছনে ছুটেছেন। তাঁর ধারণাকে তা-ই চট করে উড়িয়ে দেওয়াও যায় না। তবে এটি প্রমাণিত নয়। তাই কেউ মানুক বা না মানুক, এটি এখনো কোনো তত্ত্ব না। শুধুই ধারণা।



বিজ্ঞানীদের ধারণা, কৃষ্ণগহ্বরের কেন্দ্রে যে সিঙ্গুলারিটি বা অনন্যতা, একই রকম অনন্যতা ছিল বিগ ব্যাংয়ের সময়েও। একটি বিন্দুতে ঘন হয়ে ছিল মহাবিশ্বের সব ভর-শক্তি-স্থান-কাল-সব। কী হয়েছিল তখন? এ রহস্য সমাধান করতে হলে লাগবে সবকিছুর তত্ত্ব। দ্য থিওরি অব এভরিথিং।

সেই তত্ত্ব মেলার আগপর্যন্ত কল্পনা আর তাত্ত্বিক অনুমানই আমাদের হাতিয়ার। কৃষ্ণগহ্বরের ভেতরে কী হচ্ছে, এ নিয়ে কল্পনা করে শিউরে ওঠা। অন্য কোনো জগৎ! অসীম সম্ভাবনা। বিজ্ঞানীদের ছুটে চলা সবকিছুর তত্ত্বের সন্ধানে। কিন্তু আসলে কী? ঠিক কী আছে কৃষ্ণগহ্বরের ভেতরে’?কেউ জানে না।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

বৈশাখী অফার

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

রবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্রশনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১ 

অভিনন্দন বার্তা

[এই সাইটের যাবতীয় কন্টেন্ট অনুমতিবিহীন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ]

Copyright © 2024, Sonar Bangla 24