নিজস্ব প্রতিবেদক: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) শিবগঞ্জ বাজারের পৌর মার্কেটের সামনে বিকাল ৪টা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে মানবন্ধন করেন। মানববন্ধনে বিগত স্বৈরাচারী হাসিনার শাসনামলে যারা গুম ও হত্যার শিকার হয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, আয়নাঘর (গোপন বন্দী শালা) থেকে যেন দ্রুত গুম হওয়া মানুষদের তাদের পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেয়া হয়। অসহায় পরিবারের সদস্যরা তাদের হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের ফিরে পেতে আকুতি ও মিনতি জানায়।
এমনই এক ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকার এস.এস প্লাজা ছাত্রাবাস থেকে মো: রেজাউল করিমকে সাদা পোশাকে ‘ডিবি’ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু ৮ বছর হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত তার কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি। সে বেঁচে আছে কি মারা গেছে তার কোন খবরও পায় নি তার পরিবার। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে হিংসার বশবর্তী তাদের পরিবারের আরেক সদস্যকে গুম করা হয়। তার নাম মিজানুর রহমান। তারও কোন খবর পাওয়া যায় নি। পরিবারের সদস্যরা অশ্রুসজল চোখে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান যেন অতি দ্রুত তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তানদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন তার বৃদ্ধ বাবা। যিনি এখনো তার হারিয়ে যাওয়া সন্তানদের অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে আছেন। অপেক্ষা করছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও।
এছাড়াও দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ সোনামসজিদ এলাকার মো: মফিজ উদ্দিনকে বাসা থেকে গুম করা হয়। তারও কোন খোঁজ তার পরিবার এখনো পায় নি। তার পরিবার তাঁর সন্ধান দাবী করেন বর্তমান সরকারের প্রতি।
এদিকে পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ডিবি পরিচয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি মূলক মামলা ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিবারের নিকট মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবী করতো।
মানববন্ধনে বক্তারা সারাদেশে গুমের সংস্কৃতি বিলুপ্ত করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি এবং দেশের সকল সেক্টরকে লুটপাট ও দুর্নীতি মুক্ত করার দাবী জানান। ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে মো: ফাইয়াজ রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট মো. আসলাম-উদ-দৌলা, আল বাশরী সোহাগ, শায়মন ইসলাম, ইমতিয়াজ আহমেদ, মফিজ উদ্দিন, সাইমুন ইসলাম সাদাব প্রমূখ বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।