ইমারত বিধিমালা (বিল্ডিং কোড) লঙ্ঘনে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) দফতরে প্রায় প্রতিদিন অভিযোগ পত্র জমা পড়ছে। নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণের কারণে আশপাশের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় একটার পর একটা অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না।
ফলে নগরীতে নকশাবহির্ভূত বহুতল ভবনের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ,৫ তলার অনুমোদন নিয়ে ৭ তলা ও ৭ তলার অনুমোদন নিয়ে ১০ তলা ভবনও বানানো হচ্ছে। তবে ইমারত বিধিমালা উপেক্ষা করে সড়ক ঘেঁষে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ভবনের উচ্চতা অনুযায়ী রাস্তা ও ফাঁকা জায়গা ছাড়ার নির্দিষ্ট বিধি থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না।
ঠিক এমন ভাবেই রাজশাহী নগরীর শাহ মখদুম থানাধীন মধ্য নওদাপাড়া এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ এর বিরুদ্ধে।
বেনজীর আহমেদ মাগুরার দরিবিলা এলাকার মৃত কবিরের ছেলে। বর্তমানে ব্যাংকে চাকুরির সুবাদে নগরীর মধ্য নওদাপাড়ায় নাসিম উদ্দীনের জমির পাশে জমি কিনে একটি বহুতল ভবন নির্মান করেছেন। তবে এই নির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
নিয়ম বহির্ভূত বিল্ডিং নির্মান কাজ বন্ধে গত ২৪ অক্টোবর মৃত জয়নুদ্দীনের ছেলে নাসিম উদ্দীন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেন।
ভূক্তভোগী নাসির উদ্দীন বলেন আমি,একাধিকবার অনুরোধ করেও কাজ হয়নি। তার দাম্ভিকতা হলো তিনি একজন বিত্তবান মানুষ। প্রভাবশালী মহল দিয়ে চাপ প্রয়োগ ও দেখে নেওয়ার হুমকি এবং টাকা দিয়ে সবাইকে ম্যানেজ করেই কাজ করছেন। এমন কথাও তিনি প্রকাশ্যে বলছেন। কিন্তু বেনজির আহমেদ অপ্রতিরোধ্য। তিনি আরডিএকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তার নির্মাণ করা অব্যাহত রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন,বড়বনগ্রাম মৌজায়,আর,এস ১৮৪৭ কোন অনুমোদিত নকশাঁ পাশ নেই। ৩২৭৭ নং দাগের জায়গায় ইমারত নির্মানের আরডিএ কর্তৃক কোন অনুমতিও নেই। জমির সীমানা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়েও আরডিএর বিধি না মেনে,নকশা ও নিয়মের কোন তোয়াক্কা না করে বেনজীর আহমেদ ৫ তলা বিশিষ্ট ইমারত নির্মাণ করছেন। এই অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে কেনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না?
ভূক্তভোগী নাসিম উদ্দীন আরও বলেন, ৮২, বড়বনগ্রাম মৌজায়, হোল্ডিং নং- ১৫৮১৮,প্রস্তাবিত খতিয়ান-১৭৭৩৭, সাবেক খতিয়ান-১৬১৩,হাল খতিয়ান-৯৮২,আর.এস ১৮৪৭/৩২৭৭ নং দাগের ০.০৪৯৫ একর জায়গায় অনুমোদিত নির্মাণ কাজ করছেন বেনজীর আহমেদ।
জমির হিসেবে গড়মিল অভিযোগ থাকলেও প্রভাব খাঁটিয়ে তড়িঘড়ি করে কাজ সম্পন্ন করার পাঁয়তারা করছেন। গত কয়েকদিন আগে ঝুকিপূর্ণ তাঁর ইমারত নির্মাণের সময় ৩ জন শ্রমিক ইলেকট্রিক শট লেগে আহত হয়। ২ জন শমিক হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছে।
কিন্তু সমাধানের পথটা রহস্যে ঘেরা। মিলছে না সুরাহা। আরডিএ কাজ বন্ধ জানালেও কাজ চলমান রেখেছেন বেনজীর আহমেদ।কি এমন নাটকের মধ্যে পড়ে গেছি আজ শুক্রবার আবারো মিস্ত্রি দিয়ে কাজ চলমান রেখেছেন বেনজীর আহমেদ। তাহলে আমি বিচার পাবো কোথায়? কার কাছে গেলে আমি ন্যায় বিচার পাবো? আমি কি একজন দিনমজুর হয়ে ন্যায় বিচার পাবো না?
আরডিএর বিধি না মেনে বহুতল ভবন নির্মাণের বিষয়ে জানতে বেনজীর আহমেদ মুঠোফোন প্রতিবেদককে বলেন, আরডিএ থেকে ফোন করেছিল। আমি রোববার অথবা সোমবার যাবো। কিন্তু আমাকে কাজ বন্ধ রাখার সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
জানতে চাইলে,আরডিএ’র ইমারত পরিদর্শক মো. ওবাইদুর রহমান প্রতিবেদককে জানান, বেনজীর আহমেদকে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তারপরও যদি কাজ চলমান
রাখেন তাহলে রবিবার শুনানির নোটিশ দেয়া হবে। অবশ্যই আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে,এখনও বিষয়টি নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে,রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অথরাইজড অফিসার আবুল কালাম আজাদকে,একাধিকবার মুঠো ফোনে ফোন দিলে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।