1. www.rohimali2019@gmail.com : Abdur Rohim : Abdur Rohim
  2. alauddinmondol45@gmail.com : Alauddin Mondol : Alauddin Mondol
  3. dainiksonarbangla24@gmail.com : Hafiz Rahman : Hafizur Rahman
  4. msalimreza4u@gmail.com : Salim Reza : Salim Reza
  5. admin@sonarbangla24.com : sayem :
  6. allbanglanewspaperlive@gmail.com : Shipon Ahmed : Shipon Ahmed
জার্মানি থেকে বরিশালে পূর্বপুরুষের ভিটায় এসে আবেগাপ্লুত - সোনার বাংলা ২৪
২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| গ্রীষ্মকাল| বৃহস্পতিবার| সকাল ৯:৩১|

জার্মানি থেকে বরিশালে পূর্বপুরুষের ভিটায় এসে আবেগাপ্লুত

সংবাদদাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪
মেয়েদের নিয়ে জন্মভিটা দেখতে বরিশালের বাবুগঞ্জ ঘুরে গেলেন শংকর ব্যানার্জীছবি: প্রথম আলো

আমার ঠিক মনে আছে সেই শৈশবের বাড়ির ভিটা, পরিবেশ। সামনে লিচু ও আমগাছ, বড় পুকুর। এখনো আমার চোখের সামনে ছবির মতো ভাসে সেই সবুজ মায়াঘেরা বাড়িটা। ১৯৪৭ সালের কথা। তখন আমার বয়স কত আর হবে, ৮ কি ৯। বরিশাল বন্দর থেকে আমরা স্টিমারে করে খুলনায় গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ট্রেনে শিয়ালদহ। স্টিমারের গগনবিদারী হুইসেল, ক্যানটিনের সুস্বাদু খাবার। সেই স্বাদ যেন এখনো মুখে লেগে আছে। ১২ মার্চ পৈতৃক জন্মভিটায় এসে এসব স্মৃতিচারণা করছিলেন জার্মানপ্রবাসী নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ–বিশেষজ্ঞ শংকর ব্যানার্জী।

শংকর ব্যানার্জীর বয়স এখন ৮৫ বছর। ২০ বছর আগে খুঁজতে খুঁজতে তিনি আরেকবার এই জন্মভিটার সন্ধান পেয়েছিলেন। জার্মানিতে ফিরে যখন জন্মভিটার সেই ছায়াঘেরা পরিবেশ আর শৈশবের স্মৃতির কথা মেয়েদের কাছে বলেন, তখন তাঁর মেয়েরাও বায়না ধরেন বাবার জন্মভিটা দেখতে আসার। এবার তাই বরিশালের বাবুগঞ্জে নিয়ে এসেছেন দুই মেয়ে, ভাইয়ের মেয়ে ও জামাতাকে।

গত মঙ্গলবার বিকেলে শংকর ব্যানার্জী মেয়েদের নিয়ে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে নিজ ভিটায় এসে যখন দাঁড়ালেন, তখন তিনি গুনগুন করে গাইছিলেন, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।’ এক ভিন্ন আবেগ–অনুভূতি তাঁর চোখেমুখে খেলছিল। তাঁর মেয়েরাও পূর্বপুরুষের ভিটায় দাঁড়িয়ে অনেকটা আপ্লুত।
শংকর ব্যানার্জী বলেন, সম্ভবত ২০০৩ সালের দিকে কাজের সুবাদে একবার চট্টগ্রামে এসেছিলেন। সেখানে তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে বরিশালে তাঁর জন্মভিটার কথা জানান। তাঁর ওই বন্ধুর প্রবল আগ্রহে তিনি বরিশালে এসেছিলেন। এরপর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, এটা বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর এলাকায় পড়েছে। পরে সেখানে যান এবং স্থানীয় মুখার্জীবাড়ির লোকজনের সহায়তায় নিজের জন্মভিটা শনাক্ত করেন। এরপর তিনি শৈশবের সেই স্মৃতির সঙ্গে মেলান।
বর্তমানে এই পরিবারের ৫০ একরের বেশি জায়গাসহ বসতবাড়িতেই বরিশাল আঞ্চলিক হর্টিকালচার সেন্টার অবস্থিত। এই জমি অধিগ্রহণ করে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে কৃষির বিভিন্ন প্রদর্শনী খামার।য়েদের সঙ্গে শংকর ব্যানার্জী (ডানে)ছবি: প্রথম আলো

শংকর ব্যানার্জী জানান, ১৯৪৭ সালের ২৩ আগস্ট তাঁর পরিবার কলকাতায় গিয়ে আর ফেরেনি। পরে সেখানেই পরিবার থিতু হয়। বাবা প্রফুল্ল ব্যানার্জী এলাহাবাদ কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও বেশ কিছুদিন অধ্যাপনা করেন। ১৯৬০ সালে পড়াশোনার জন্য জার্মানিতে পাড়ি জমান শংকর। পড়াশোনা শেষ করে সেখানেই জার্মান মেয়ে গ্যাব্রিয়েলকে বিয়ে করে থিতু হন তিনি। প্রথমে টেক্সটাইল মিল করে ব্যবসা শুরু করলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। পরে তিনি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ডিজাইনার হিসেবে পেশা বেছে নেন। জার্মানি ছাড়াও বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে তিনি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ডিজাইন করেছেন।

মেয়েদের আবদারে শংকর ব্যানার্জী গত শনিবার বাংলাদেশে আসেন। সেখান থেকে সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্তর আগ্রহে প্রথমে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলায় ঐতিহ্যবাহী মনসামন্দির পরিদর্শনে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মেয়ে জার্মানির একটি টেলিভিশনের সাংবাদিক শকুন্তলা ব্যানার্জী, শিল্পী শর্মিলা ব্যানার্জী এবং ভাইয়ের মেয়ে চিকিৎসক দেবী ব্যানার্জী ও জামাতা লুকাস ওয়ালপট। গত মঙ্গলবার বিকেলে মেয়েদের নিয়ে আসেন তাঁর পৈতৃক ভিটায় বাবুগঞ্জের রহমতপুরে।শংকর ব্যানার্জী ঘুরে ঘুরে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের হর্টিকালচারের মধ্যে তাঁদের ভাঙা–বিধ্বস্ত বাড়ি ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘এটা ছিল আমাদের নারায়ণ মন্দির। এখানে সোনার দুটি প্রতিমা ছিল, যা আমাদের জ্যাঠামশাই সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আবার কবে আসি জানি না। কিংবা আবার আসতে পারব কি না, তা–ও জানি না। তবে মেয়েরা দেখতে চাইছিল, তাই ফিরে আসা। আবার হবে তো দেখা, হবে?’

শংকর ব্যানার্জীর এখনো এই দেশ, মাটির প্রতি গভীর মায়া হৃদয়জুড়ে। তাঁর কথায় সেটা ফুটে উঠেছিল। তিনি বললেন, ‘আমি এ দেশের জন্য কিছু করতে চাই, মনটা এ জন্য সব সময় আকুলি-বিকুলি করে। নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আমার একটি  প্রস্তাব গৃহীতও হয়েছিল। পরে তা এগোয়নি। তবে বরিশাল সিটি করপোরেশনে ওয়েস্টম্যানেজমেন্ট থেকে বিদ্যুৎ তৈরির একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে।’শংকর ব্যানার্জীর দুই মেয়ের কাছে পূর্বপুরুষের ভিটায় ফেরার অনুভূতি জানতে চাইলে শকুন্তলা ব্যানার্জী বলছিলেন, ‘এ এক ভিন্ন অনুভূতি, যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম এই জায়গাটায় আসব, এই মাটি স্পর্শ করব। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। অবশ্যই এটা জীবনের শ্রেষ্ঠতর এক মুহূর্ত আমাদের।’
আরেক মেয়ে শর্মিলা ব্যানার্জী বলছিলেন, ‘পিতৃপুরুষের এই জায়গা যে এত সুন্দর, এত মনোরম, সেটা কল্পনায়ও ছিল না। এটা কল্পনাকেও হার মানাচ্ছে। আমরা বারবার এখানে ফিরতে চাই, পূর্বপুরুষদের স্পর্শ অনুভব করতে চাই।’

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

বৈশাখী অফার

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

রবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্রশনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১ 

অভিনন্দন বার্তা

[এই সাইটের যাবতীয় কন্টেন্ট অনুমতিবিহীন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ]

Copyright © 2024, Sonar Bangla 24