কাঠাল হল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার জাতীয় ফল এবং ভারতের কেরালাও তামিলনাড়ুর রাজ্য ফল। কাঁঠাল বা Jackfruit এটি সমস্ত গাছের ফলের মধ্যে বৃহত্তম ফল।
দক্ষিণ ভারতের পশ্চিম ঘাট এবং মালয়েশিয়ার বৃষ্টি অরণ্যের মধ্যবর্তী অঞ্চল কাঁঠালের উৎপত্তি স্থান হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশ, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণ ভারত, বিহার, মায়ানমার, মালয়, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি এলাকা ছাড়া বিশ্বের আর কোথাও এরূপ ব্যাপকসংখ্যায় কাঁঠালের চাষ করতে দেখা যায় না। তবে ব্রাজিল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জামাইকা প্রভৃতি দেশে সীমিত আকারে কাঁঠাল জন্মায়। সাধারণত লালচে মাটি ও উঁচু এলাকায় এটি বেশি দেখা যায়। বাংলাদেশের মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়, এবং পাবর্ত্য এলাকায় কাঁঠালের চাষ বেশি হয়।
ভারত, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া দেশগুলো কাঁঠাল উৎপাদনে শীর্সস্থানে আছে। কাঁঠাল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়।
কাঁঠাল এক প্রকারের হলুদ রঙের সুমিষ্ট গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফল হিসাবে সরকারীভাবে নির্ধারিত। বাংলাদেশের সর্বত্র কাঁঠাল গাছ দেখা যায়। কাঁচা কাঁঠালকে বলা হয় এঁচোড় যা বাঙালি সমাজে গাছপাঁঠা নামেও সমধিক পরিচিত। কাঁঠাল গাছের কাঠ আসবাবপত্র তৈরীর জন্য সমাদৃত। কাঁঠাল পাতা বিভিন্ন প্রাণীর পছন্দের খাদ্য। তুলনামূলকভাবে বিশালাকার এই ফলের বহির্ভাগ পুরু এবং কান্টকাকীর্ণ, অন্যদিকে অন্তরভাগে একটি কাণ্ড ঘিরে থাকে অসংখ্য রসালো কোয়া বা কোষ । কোয়ার অভ্যন্তরভাগে থাকে কাঁঠালের বৃহদাকার বীজ।
উপমহাদেশের এই ফল খাদ্যগুণ ও পুষ্টিমূল্যে ভরপুর। তাই কাঁঠালকে সুপার ফুড বলা হয়।
পুষ্টিবিদরা জানান, সুস্থ থাকতে খেতেই হবে কাঁঠাল, জানুন এই রসাল ফল কোন্ কোন্ রোগ প্রতিরোধ করে।
১। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন “এ” রয়েছে কাঁঠালে। এই ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
২। ফাইবারের ভালো একটি উৎস কাঁঠাল। কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয় নিয়মিত কাঁঠাল খেলে।
৩। আলসারের সমস্যা প্রাকৃতিক উপায়ে কমাতে সাহায্য করে কাঁঠালে থাকা এক ধরনের উপকারী উপাদান।
৪। বেশ কয়েক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস কাঁঠাল। এসব উপাদান হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৫। কাঁঠালে থাকা পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
৬। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি মেলে কাঁঠাল থেকে। নিয়মিত ফলটি খেলে তাই ত্বক ভালো থাকে ও ত্বককে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে রাখা যায়।
৭। অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে কাঁঠাল খেলে। ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে থাকা যায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৮। বেশ কয়েক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস কাঁঠাল। এসব উপাদান হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৯। ক্যানসারের ঝুঁকি কমে কাঁঠাল খেলে।
১০ । শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে কাঁঠালে থাকা ভিটামিন সি।
১১। কাঁঠালে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি হাড় শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে।
১২। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। এই খনিজ উপাদান রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।